মাসখানেক আগে, এক মেঘলা দিনে, ঋদ্ধি আর তার তুতো ভাই ঋষণ হাফ ডজন সাঙ্গোপাঙ্গোকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রাম মহকুমার বাঁশতলা গ্রামে, বাঁশতলা জুনিয়র হাই স্কুলের দাদা-দিদিদের সঙ্গে আলাপ করবে বলে। আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমেছিল সেদিন, সন্ধে নেমেছিলো যেন দুপুর বারোটাতেই। তা, বিষ্টিবাদলা ছিলো বলে দুই ভাইবোনে মাঠেঘাটে ছুটে বেড়াতে পারেনি বটে, তবে খুব তাড়াতাড়ি আলাপ জমে উঠেছিল ইস্কুলের দাদা-দিদিদের সঙ্গে। সবাই মিলে হইহই করে গান গাওয়া, কবিতা পড়া, গল্পগুজব করা, সঙ্গে মুড়িমাখা গালে ফেলা মাঝেমধ্যে, সব মিলিয়ে সে এক দারুণ ব্যাপার। দিদিরা এদের দুভাইবোনকে দুটো চকের টুকরো এনে দিয়েছিল, সেই চক দিয়ে দুজনে মনের আনন্দে চেয়ার টেবিলে এঁকে বেড়িয়েছে, অনেকটা সেই আদিকালের গুহাচিত্রের মতো।
বাঁশতলা জুনিয়র হাইস্কুলে ক্লাস রয়েছে ফাইভ থেকে এইট পর্যন্ত। নাইন থেকে পড়াশোনার জন্য দাদা-দিদিদের যেতে হয় বাঁধগোড়া বলে একটা জায়গায়, ওদের গ্রামে আর কোনও বড় স্কুল নেই। ইস্কুলের দাদা-দিদিরা পড়াশোনা তো করেই, সেইসঙ্গে করে আরও অনেক কিছু। মাস্টারমশাই শ্রী রাজীব দাসের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে গাছ লাগানো, নাটকের মাধ্যমে নানা সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করা, মা কাকীমা ঠাকুমাদের লেখাপড়া শেখানো, তাঁদের কাজে সাহায্য করা, গ্রামের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা - এমন আরও অনেক কাজ। ওরা খুব সুন্দর ছবি আঁকে, কেউ কেউ কবিতাও লেখে।
ঋদ্ধি, ঋষণ আর ওদের দলবল ফিরে আসার আগে মাস্টারমশাই আর দাদা-দিদিরা মিলে ওদের সবাইকে উপহার দিয়েছিলেন ভারি সুন্দর কয়েকটা ছবি। ওরা সেই ছবিগুলো ভাগ করে নিয়েছে কিশলয়ের সঙ্গে। এবারের সংখ্যায় রইলো কিছু ছবি, কিছু থাকবে পরের সংখ্যায়। তোমরা দেখে জানিও কিন্তু, কেমন লাগলো ছবিগুলো, বাঁশতলা গ্রামের বন্ধুদের কাছে আমরা খবর পৌঁছে দেবো, খুব ভালো লাগবে সবার।
(কলমে : ধূপছায়া)
খুব সুন্দর
ReplyDeleteকি সুন্দর প্রতিটা ছবি আর ওই কবিতাটা। অসাধারণ। 😊
ReplyDelete