গোলোকধাঁধা




ক. বলো দেখি :


চার অক্ষরের শব্দ যে ভাই
হাঁকডাক করি শুধুই,
প্রথম অর্ধ বাদ দিলে ‘পরে
থামবে না ডাক মোটেই।

শেষের অর্ধ বাদ যদি দাও
ইংরাজিতে ‘ডাকি’,
বাংলায় হবে যন্ত্র সেটা
বল তো কী দেখি?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

খ. ওলটপালট
নিচের চারটি শব্দের বর্ণগুলো উল্টেপাল্টে গেছে। সেগুলোকে সাজিয়ে নিয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ বানাতে পারবে?

১. ভে জা গ জি

২. অ ন্দ র নি সু ন্দ্য

৩. ঠ ক কা ড়ি

৪. সু ন র কি চু


~~~~~~~~~~~~~~~~~~

গ. বলো দেখি !


লেজামুড়ো ছাড়ো যদি
গাছ পুঁতি তাতে 
শুরুখানা বাদ দিলে 
কিক মারি যাতে।
শেষ যদি কেটে দাও 
ঘুরি পথে পথে,
আমি আছি তাই সব
হুল্লোড়ে মাতে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

ঘ. গল্পের ভুল ধরো :

নিচের গল্পটা খুব তাড়াহুড়ো করে লিখে ফেলেছি। তাতে থেকে গেছে অজস্র ভুল। বন্ধুরা, একটু খুঁজে বের করবে কি কি ভুল আছে গল্পের মধ্যে?

গাছে কাঁঠাল টাকে তেল

ধূপছায়া কুণ্ডু
সুস্মিতা মজুমদার

শব্দটা খানিকক্ষণ ধরেই শুনতে পাচ্ছিলেন ভূপেনবাবু, কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠতে আর পারছিলেন না। আজ বিকেলে পার্কে হাঁটতে গিয়ে ডান পায়ের গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন, রীতিমতো খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে। ফুলে ঢোল হয়ে থাকা পা নিয়ে এই শীতের রাতে লেপের মায়া কাটিয়ে ওঠা কি চাট্টিখানি কথা! পাশে গিন্নি থাকলে নাহয় তাঁকেই ঠেলেঠুলে দেখতে পাঠাতেন কিসের শব্দ, কিন্তু সে গুড়েও বালি। মাথাই নেই, তার মাথাব্যথা! ব্যাচেলর মানুষ, একা থাকেন, একাই দুবেলা দুটো ফুটিয়ে খান, কাজেই রাতবিরেতে শব্দ শুনতে পেলে তাঁকেই উঠতে হবে বইকি। 

খাট থেকে নেমে চটি পায়ে গলিয়ে দুদ্দাড়িয়ে ছুটলেন বসার ঘরের দিকে, শব্দটা ওইখান থেকেই আসছিল তো। বসার ঘরে তখন ভুরভুর করছে গাছপাকা কাঁঠালের গন্ধ। ভূপেনবাবুর একমাত্র মেয়ে ললিতা আর তার বর অলকেশ এসেছে বিয়ের প্রথম বছরের জামাইষষ্ঠীর নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে, সঙ্গে এনেছেন তাঁদের বাগানের গাছপাকা কাঁঠালটি। ভূপেনগিন্নির আবার কাঁঠালে অ্যালার্জি, ছুঁলেই হাতে লালচে চাকা চাকা দাগ বেরোয়। তাই সেটা অমনি রাখা আছে, কাল সকালে রান্নার মেয়ে এসে কাটবে'খন। তা, ভূপেনবাবু দেখলেন সেই কাঁঠালখানা জাপটে ধরে সোফার পাশে কোনাচে মতন জায়গাটায় বসে আছে একটা লম্বা শুঁটকোপানা লোক। তাঁকে দেখেই গ্যালগেলে হাসি হেসে উঠে দাঁড়িয়ে এক পেল্লাই পেন্নাম ঠুকল সে, সেইসঙ্গে কিসব যেন বলে উঠল। ভূপতিবাবু আবার কানের মেশিন না পরলে কিস্যু শুনতে পান না। তিনি ইশারায় লোকটাকে বসতে বলে শোবার ঘরে এলেন। খাটের পাশের টেবিলে খুলে রাখা ছিল কানের মেশিনটা, সেটাকে পরে নিয়ে তড়িঘড়ি বসার ঘরে ফিরে এলেন। এসে তো তিনি হাঁ। লোকটা বেমালুম উবে গেছে। কোত্থাও নেই। 

বেশ খানিকক্ষণ এদিক ওদিক খুঁজলেন। তারপর জামাইয়ের ঘরে গিয়ে টোকা দিলেন। সে বেচারা ঘুম জড়ানো চোখে বেরিয়ে এল। ভূপেনবাবুকে সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে অবাক হয়ে বলল,
-“শরীর খারাপ করছে নাকি বাবা? তখনই বললুম অত কাঁঠাল খাবেন না। আপনার ছোটোমেয়েও অত করে বারণ করল, কারোর কথা শুনলেন না।”
ভূপেনবাবু বিরক্ত হয়ে বললেন,
-“আরে দূর বাবা ওসব কিছুনা। বসার ঘরে কে একটা বেঁটে টাকমাথা লোক তোমার আনা কাঁঠালটা নিয়ে পালিয়ে গেল যে।”
ভূপেনবাবুর কথা শুনে অম্বিকেশ বেরিয়ে এল ঘর থেকে। তারপর বৈঠকখানায় গিয়ে দেখল কেউ নেই কাঁঠালও নেই। হঠাৎ হো হো করে হেসে বলল,
-“ও হো! বুঝেছি! ও তো কানাই। আমাদের বাড়ির পুরনো চাকর। বছর তিন আগে মারা যায়, তখন আমি আর ললিতা হনিমুনে গেছিলাম বলে শেষ দেখা দেখতে পাইনি। বড্ড কাঁঠাল খেতে ভালোবাসত কানাইদা। বিশেষ করে আমাদের বাড়ির ওই গাছটার পাকা কাঁঠাল। আজ তাই মনে হয় ঐ কাঁঠালের লোভেই এসেছিল। যাকগে আপনি চিন্তা করবেন না বাবা, শুয়ে পড়ুন। কানাইদা কারোর ক্ষতি করে না, ও খুব ভালো ভূত।”

এই বলে অলকেশ চলে গেল নিজের ঘরে। ভূপতিবাবুও ফোঁস করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চলে গেলেন নিজের ঘরে। মনে মনে ভাবলেন, ভূতের কপালেও কাঁঠাল জোটে, শুধু তাঁর বেলাতেই যত বিধিনিষেধ।

(সমাপ্ত)




উত্তর পাঠাও মেইল করে , blog.kromosho@gmail.com আইডি তে। 
 সঠিক উত্তরদাতাদের নাম প্রকাশিত হবে পরের সংখ্যায় । ধাঁধার উত্তরও থাকবে পরের সংখ্যায় ।




1 comment:

  1. দারুণ মজার। খুব খুব ভালো।

    ReplyDelete