গল্পের ঝুলি : নটে গাছটি মুড়োলো : অনন্যা দাশ



নটের খুব শখ সে গোয়েন্দা হবে। সারাদিন ধরে শুধু নানারকমের গোয়েন্দা গল্প পড়ে সে। পড়ে বললে ভুল হবে। একেবারে গোগ্রাসে গেলে! অত গোয়েন্দা গল্প পড়ে, জ্ঞানে একেবারে টইটুম্বুর হয়ে যাওয়ার পরই সে ঘোষণা করল যে সে গোয়েন্দা হবে।
ওর ওই ‘নটে’ নামটার পিছনেও অবশ্য একটা গল্প আছে। সে যখন বেশ ছোট তখন খাতার ওপর NOTE লেখাটা দেখে বলেছিল, “এটার ওপর নটে লেখা আছে কেন? নটে শাকটি মুড়োলো বলে?” 
তাই শুনে তো সবার সে কী হাসি! আর ওর নামটাই নটে হয়ে গেল। ভালো নাম একটা আছে বটে কিন্তু কেউ আর ওকে সেই নামে ডাকে না। 

ওর দিদি রিম্পা তো ওর গোয়েন্দা হওয়ার কথা শুনে হেসেই খুন হয়, বলে, “ওরে নটে, গোয়েন্দা হওয়ার জন্যে শুধু বই পড়লে হয় না! উপস্থিত বুদ্ধিও থাকতে হয়, মানে কমন সেন্স আর কি! তোর আছে?”

নটে অমনি বলে, “হ্যাঁ! আছে তো!”

“তাহলে আজ সকালে যখন ব্রেকফাস্ট করছিলি তখন তো টিভিটা গাঁ গাঁ করে চলছিল। লোকটা বারবার বলল আজ বৃষ্টি হবে তাও তুই মনে করে ছাতা বা রেনকোট নিলি না! ভিজে ভিজে স্কুল থেকে ফিরলি! তোর দ্বারা ওই সব গোয়েন্দাগিরি হবে বলে মনে করছিস?” 

নটে রেগে গিয়ে বলল, “হুঁ! ওই সব বৃষ্টি ছাতাটাতার সঙ্গে গোয়েন্দাগিরির কোন সম্পর্ক নেই! পিটার তো ওই সব কিছু নিয়ে ভাবে না!”

‘পিটার, দা প্রাইভেট আই’ হচ্ছে নটের সবচেয়ে প্রিয় গোয়েন্দা। পিটার সিরিজের সব বই নটের পড়া হয়ে গেছে। এখন সে ‘সিড, দা সিক্রেট স্পাই’ সিরিজটা ধরেছে। 

ওরা যেখানে থাকে সেই জায়গাটা বেশ ছোট। মার্কিন মুলুকের একটা গ্রামই বলা যেতে পারে। খুব সবুজ খোলামেলা জায়গা। ওদের বাড়ির দুটো বাড়ি পরেই থাকেন মিস্টার ও মিসেস স্মিথ। আর তাঁদের বাড়িতে থাকে অনেক রকমের জন্তু জানোয়ার। তাঁরা ভয়ঙ্কর পশুপ্রেমী, তাই দুটো কুকুর, তিনটে বেড়াল, গোটাচারেক খরগোশ, দুটো চিঞ্চিলা (বড়সড় ইঁদুরের মতন দেখতে একটা জন্তু) এই সব নিয়ে থাকেন। সবাই স্মিথদের বাড়িটাকে চিড়িয়াখানা বাড়ি বলে ডাকে। ওই সব জন্তু ছাড়াও স্মিথদের বাড়িতে নতুন এসে জুটেছে একজোড়া অ্যালবিনো পায়রা। একেবারে ধবধবে সাদা রঙ তাদের। চোখ আর পা-গুলো গোলাপি। ভারি সুন্দর দেখতে। স্মিথরা তাদের নাম দিয়েছেন কিং আর কুইন। মিসেস স্মিথ কিং আর কুইনকে প্রচন্ড ভালোবাসেন সেটা সবাই জানে। অত জন্তু আছে বলে বাড়িতে কাজ খুব বেশি। তাই ওদের বাড়িতে একজন বয়স্ক কাজের মহিলা আছে মেরি আর আছে মিস্টার স্মিথের ভাগ্নে হ্যারি আর ভাইঝি জ্যানেট। পাড়ার সব বাচ্ছারা প্রায়ই ওদের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় জন্তুদের সঙ্গে খেলবে বলে। নটে তো একবার ওদের বাড়ি থেকে ফিরে খুব বায়না ধরেছিল একটা কুকুর পুষবে বলে। মা তো কিছুতেই রাজি হবেন না। বললেন, “এখানে এমনিতেই কাজ করে করে হাড়মাস কালি হয়ে যাচ্ছে আর ওই সব কুকুরটুকুর আমি রাখতে পারব না! তাছাড়া খুব যখন বরফ পড়বে তখন কে তাকে বাইরে নিয়ে যাবে শুনি? তোমরা সবাই লেপের তলায় ঢুকে বসে থাকবে আর আমার ঘাড়ে সব কাজ এসে পড়বে! ও সব হবে না। ওই স্মিথদের সঙ্গে ভাব জমাও। ওদের পোষা অনেক জন্তুদের সঙ্গে খেলা করে এসো বাপু!” 

অগত্যা নটে আর রিম্পা তাই করেছে। রোজ বিকেলে স্মিথদের বাড়ি গিয়ে কিছুক্ষণ ওঁদের পোষ্যদের সঙ্গে খেলা করে আসে। তাতে স্মিথরাও খুশি, মা-ও খুশি। 

এমনি করে বেশ চলছিল। হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে ফিরে খেয়েদেয়ে ওরা স্মিথদের বাড়িতে গিয়ে দেখে সেখানে কান্নাকাটি চলছে। নটে আর রিম্পা তো বেশ ঘাবড়েই গেল। এমনটা তো দেখেনি তারা কখনও। কুকুর দুটো, মানে চকোলেট আর ব্রাউনি, ওদের চেনে তাই এসে পা চেটে দিয়ে গেল। এদিকে মিসেস স্মিথ সমানে কেঁদে চলেছেন। মিস্টার স্মিথ ওদের ইশারায় অন্য ঘরে ডাকলেন। ওরা যেতে উনি বললেন, “রোজির মনটা খুব খারাপ তাই ও কাঁদছে। তোমরা কিছু মনে কোরো না।”

রিম্পা জিজ্ঞেস করল, “কী হয়েছে মিসেস স্মিথের?”

“আর বোলো না। কিং আর কুইনকে পাওয়া যাচ্ছে না আজকে দুপুরের পর থেকে!”

“ওমা সে কি!”

“হ্যাঁ, শুধু তাই নয়। আজ বিকেলে পোস্টবক্সে একটা চিঠিও এসেছে মুক্তিপণ চেয়ে। পাঁচ হাজার ডলার চাইছে ওই দুটো পায়রার জন্যে! ওদের দাম অত নয় মোটেই। আমি বলেছিলাম নতুন পায়রা কিনে নিতে কিন্তু রোজি তো শুনবে না, ওর কিং আর কুইনকেই চাই। কী যে করব আমি বুঝতে পারছি না।” 

“পুলিশে খবর দিয়েছেন আপনারা?”

মিস্টার স্মিথ কিন্তু কিন্তু করে বললেন, “আমি তো খবর দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ওই চিঠিতে লেখা রয়েছে যে পুলিশে খবর দিলে কিং আর কুইনকে ওরা মেরে ফেলবে তাই রোজি তো পুলিশে যেতে দেয়নি আমাকে।”

সেই শুনে নটের তো গোয়েন্দাগিরি করার ইচ্ছে চাড়া দিয়ে উঠল। সে বলল, “ওই চিঠিটা একবার দেখতে পারি?”

“হ্যাঁ, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই!” বলে মিস্টার স্মিথ চিঠিটা এনে ওদের দেখালেন। 

“আমি সাবধানেই রেখেছি ওটাকে। যদিও পুলিশের কাছে যখন যাচ্ছি না তখন হাতের ছাপ পড়ার তো আর সুযোগ নেই।”

একটা সাদা কাগজে খবরের কাগজ থেকে শব্দ কেটে কেটে আঠা দিয়ে জুড়ে চিঠিটা তৈরি করা হয়েছে। 

নটে সেটা দেখে বলল, “এটা দেখে বোঝা যাচ্ছে যে এমন কেউ এটা লিখেছে যার হাতের লেখা আপনারা চেনেন।”

রিম্পা ফিসফিস করে বলল, “তোর মাথা আর মুন্ডু! যে কেউ ওই রকম করতে পারে।” 

নটে আরো বলল, “আপনারা কি কাউকে সন্দেহ করেন?” 

“না, কাকে সন্দেহ করব? আমরা এই পাড়াতে বহুদিন ধরে আছি। সব বাচ্চারা এসে আমাদের বাড়িতে খেলা করে যায়। তাদের মধ্যে থেকে কেউ একাজ করেছে বলে আমি মনে করি না। মেরি তিরিশ বছর ধরে আমাদের বাড়িতে কাজ করছে। তাকে আমরা সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করি। সে হতেই পারে না! এ ছাড়া রয়েছে হ্যারি আর জ্যানেট। তারা তো আমাদের আত্মীয়। তাদের ওপরই বা দোষ দিই কী করে? কিন্তু কেউ একটা তো কাজটা করেছে।” 

নটে বলল, “আমি একটু আধটু গোয়েন্দাগিরি করি। আমি চেষ্টা করে দেখব?” 

মিস্টার স্মিথ তো তাই শুনে ভীষণ খুশি হয়ে বললেন, “তাহলে তো খুব ভালো হয়! পুলিশের কাছেও যেতে হবে না অথচ চোরও ধরা পড়বে।তুমি প্লিজ চোরটাকে খুঁজে বার করে দাও। তোমার উপকার তাহলে আমরা কোনওদিন ভুলব না। রোজি বেচারার দশা তো তোমরা দেখছই!” 

বাড়ি ফেরার পথে রিম্পা নটেকে বলল, “খুব তো বললি চোর ধরে দিবি! এবার কী করবি শুনি? মা শুনলে না বেদম পেটাবে!”

নটে বলল, “ওসব ছাড়, কাউকে সন্দেহ করিস তো বল।” 

রিম্পা বলল, “সন্দেহ করি না একেবারে জানি কে করেছে কাজটা!”

“অ্যাঁ! বলিস কী রে! কে করেছে?”

“হ্যারি, আবার কে! মনে নেই সেদিন গজর গজর করছিল যে মানুষের ছেলেমেয়েরা খেতে পায় না আর এদের পশুপাখি নিয়ে আদিখ্যেতা!” 

“হ্যাঁ, ঠিক বলেছিস! তা বলছিল বটে। কিন্তু কোথায় রেখছে সেটা কী করে বোঝা যাবে বল তো?” 

“হ্যারির ওপর নজর রাখতে হবে। কোথায় যাচ্ছে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।”

নটে বলল, “ঠিক আছে, সেটা করা যাবে।”

বলে বাড়ি ফিরে কাদের জানি সব ফোন করল। 

রাত ন'টার সময় হঠাৎ সে রিম্পার কাছে এসে বলল, “দিদি চট করে একবার যেতে হবে। আমার যে বন্ধুকে হ্যারির ওপর নজর রাখতে বলেছিলাম সে ফোন করেছে। হ্যারি বেরিয়েছে, তাই আমাদের ওর পিছু নিতে হবে।”

“এখন এই রাতের বেলা?” রিম্পা অবাক। 

“হ্যাঁ, তোকে কোনও একটা উপায় করতেই হবে!” নটে কাকুতি মিনতি করে বলল। 

রিম্পা চট করে নিজের কানের একটা দুল পকেটে পুরে মাকে গিয়ে বলল, “মা, আমার কানের একটা দুল মিস্টার স্মিথদের বাড়িতে খুলে পড়ে গেছে মনে হয়। নিয়ে আসব?” 

সোনার দুল তাই মা শুনে বললেন, “ঠিক আছে যাও। চট করে চলে এসো। নটেও যাচ্ছে তো সঙ্গে?”

“হ্যাঁ, এই যাবো আর এই আসব।” 

দুই ভাইবোন পড়ি কি মরি ছুটতে ছুটতে বের হল। কিছু দূর গিয়েই হ্যারিকে দেখা গেল। সে কিছুটা দূর হেঁটে গিয়ে একটা খামার পর্যন্ত গিয়ে চট করে একটা খামারঘরের ভিতরে ঢুকে একটু পরেই আবার বেরিয়ে এসে বাড়ি ফিরে গেল। 

রিম্পা বলল, “কাল শনিবার। স্কুল নেই। সকালে আমরা ওই খামার ঘরে গিয়ে দেখে আসব কী আছে, কেমন?” এর পর ওরা দুজন বাড়ি ফিরে এল। 


(২)

পরদিন সকালে জলখাবারের পর ওরা দুজন খামারবাড়িতে গিয়ে হাজির। যে ঘরে হ্যারি ঢুকেছিল সেখানে ঢুকে ওরা তো অবাক! প্রায় পঞ্চাশটা পায়রা রয়েছে সেখানে। সব বকবকুম করে চলেছে। কিন্তু সবকটাই সাধারণ পায়রা। সাদা পায়রা একটাও নেই। 

নটে বলল, “এ বাবা এখানে তো নেই! ও গতকাল তাহলে এখানে কী করছিল?” 

রিম্পা হঠাৎ বলল, “যেদিন বৃষ্টি পড়ছিল সেদিন তুই স্কুলে কী নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিলি?”

“ছাতা! কেন ছাতা দিয়ে কী হবে?”

“পায়রাদের কি ছাতা থাকে?”

“কী আজেবাজে বলছিস তুই!” নটে বিরক্ত হয়ে বলল। 

“বাইরে একটা জলের পাইপ ছিল না?” রিম্পা বলল। 

“হ্যাঁ, ছিল তো!”

“চল তাহলে পায়রাদের একটু বৃষ্টিতে স্নান করিয়ে দিই।” 

“কেন?” 

“দেখ না মজা!” বলে রিম্পা বাইরের পাইপটাকে গিয়ে দেখল। একটা কলের সঙ্গেই লাগানো ছিল সেটা কিন্তু কলটা বন্ধ। কল খুলতেই জল বেরিয়ে এল মুখ দিয়ে। রিম্পা পাইপটাকে টেনে ভিতরে নিয়ে গিয়ে ঝাঁঝরিটা এমন ভাবে লাগালো যে বৃষ্টির মতন জল পড়তে লাগল। পায়রাদের মধ্যে হুটোপাটি লেগে গেল! কিছু পায়রা অবশ্য খুব মজা করে স্নান করল।

স্নান শেষ হতে দেখা গেল সব সাধারণ পায়রার মধ্যে দুটো পায়রার গায়ে কেমন একটু সাদা নীল ছোপ ছোপ! রিম্পা এবার নটেকে বলল, “সাদা পায়রা দুটোকে সাধারণ করার জন্যে ওদের গায়ে রঙ মাখানো হয়েছিল। ওই দুটো পায়রাই কিং আর কুইন। যা এবার ছুটে গিয়ে মিস্টার আর মিসেস স্মিথকে ডেকে নিয়ে আয়। আমি এখানেই অপেক্ষা করছি।”

নটে লাফাতে লাফাতে চলে গেল। 

রিম্পা অপেক্ষা করছিল হঠাৎ ওর চুলে ভয়ঙ্কর একটা টান পড়ল আর মাথায় কে যেন দুম করে কী একটা মারল। হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল রিম্পা আর তখুনি পিছন থেকে কড়া গলায় একজন বলল, “একটুও নড়বে না! নড়লেই গুলি করব!” 

রিম্পা কোনওরকমে উঠে বসে চোখ কচলে তাকিয়ে দেখল নটে একজন পুলিশ অফিসারকে সঙ্গে করে এনেছে, যে খুব রাগী রাগী মুখ করে জ্যানেটের হাতে হাতকড়া পরিয়ে দিচ্ছে। 

(৩)

এখন রিম্পা আর নটে স্মিথদের হিরো হয়ে গেছে। আসলে কাজটা ছিল জ্যানেটের। হ্যারিও ওদের মতন পায়রাগুলোকে খোঁজার চেষ্টাতেই খামারে গিয়েছিল। সে মনে হয় জ্যানটেকে ওই ঘরে ঢুকতে দেখে আন্দাজ করেছিল যে জ্যানেট অন্য পায়রাদের সঙ্গেই কিং আর কুইনকে রেখেছে কিন্তু সব সাধারণ পায়রা দেখে সে ফিরে যায়। তারপর রিম্পা জল দিয়ে ভেজাতে কিছুটা রঙ ধুয়ে যেতে কিং আর কুইনকে বোঝা যাচ্ছিল। নটে স্মিথদের বাড়ি যাওয়ার পথে একজন পুলিশকে দেখতে পায় আর ওর কী মনে হয়েছিল তাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে। নাহলে জ্যানেট রিম্পাকে মেরে অজ্ঞান করে পায়রাগুলোকে নিয়ে পালাবার চক্করে ছিল। ওর স্মিথদের বাড়িতে আর ভাল লাগছিল না তাই ভাবছিল কিছু অর্থ জোগাড় করে নিউ ইয়র্ক পালিয়ে যাবে।

মিসেস স্মিথ তাই শুনে হেসে বলেছিলেন, “কী বোকা মেয়ে রে বাবা! ওই অর্থ দিয়ে নিউ ইয়র্কে কিছুই তো হবে না, যা দামি শহর!” উনি জ্যানেটকে ক্ষমা করে দিয়েছেন কিন্তু ওঁদের বাড়িতে আর তার ঠাঁই হয়নি। 

যাই হোক নটে আর রিম্পার গোয়েন্দাগিরিতে কিং আর কুইনকে ফিরে পেয়ে স্মিথরা স্বামী স্ত্রী দুজনেই খুব খুশি। সেই খুশির উপহার হয়ে একটা বড়ো খাঁচাতে করে ওদের বাড়িতে এসেছে পোস্ত আর পান্তুয়া, স্মিথদের চিঞ্চিলা দম্পতির সদ্য হওয়া দুটি ছানা! 


অলঙ্করণ : আবির

1 comment:

  1. করে মিষ্টি গল্প। আমার মেয়ে এটা শুনেই ভাত খেলো আজ।

    ReplyDelete